সংকটাপন্ন নারী সার্জেন্টের বাবা, ১৩ দিন পর মামলা নিল পুলিশ

Passenger Voice    |    ০৮:০৮ এএম, ২০২১-১২-১৭


সংকটাপন্ন নারী সার্জেন্টের বাবা, ১৩ দিন পর মামলা নিল পুলিশ

রাজধানীর বনানীর চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকায় গত ২ ডিসেম্বর গভীর রাতে প্রাইভেটকারের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন পুলিশের সার্জেন্ট মহুয়া হাজংয়ের বাবা মনোরঞ্জন হাজং। পরে তার ডান পায়ের হাঁটুর নিচ থেকে কেটে ফেলতে হয়েছে। তিনি শাহবাগে বারডেম হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্য কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন। তার অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। 

ঘটনার পর তার মেয়ে সার্জেন্ট মহুয়া হাজং গাড়িটির চালকের বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা করতে যান, কিন্তু পুলিশ মামলা নেয়নি। তবে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে ঘটনার ১৩ দিন পর বৃহস্পতিবার মামলা নিয়েছে পুলিশ।


ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান সমকালকে বলেন, যে ব্যক্তি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন, তিনি ইউটার্নে উল্টো দিক দিয়ে আসছিলেন। ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। কেনো কীভাবে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটল তার তদন্ত চলছে। বৃহস্পতিবার মামলা নেওয়া হয়েছে।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সাবেক হাবিলদার মরোনঞ্জন হাজংয়ের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার কলমাকান্দা থানার বগাডুবীতে। তার মেয়ে সার্জেন্ট মহুয়া হাজং ডিএমপির সেন্ট্রাল কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারে কর্মরত। 

ফলো করুন- 
মনোরঞ্জন হাজং মেয়ে ও একমাত্র ছেলেকে নিয়ে নিউবেইলী রোডে বসবাস করেন। তিনি বনানীতে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। মোটরসাইকেল চালিয়ে গত ২ ডিসেম্বর রাত সোয়া ২টার দিকে তিনি বনানীর চেয়ারম্যান বাড়ির ইউটার্নে পৌঁছলে একটি বেপরোয়া গতির প্রাইভেটকার (ঢাকা মেট্টো-ঘ-১৫-৪৯০৬) তার মোটরসাইকেলের পেছনে ধাক্কা দেয়। এতে তার ডান পা থেঁতলে এবং বাম পয়ের হাড় ভেঙে যায়। মরোনঞ্জন হাজংকে ভর্তি করা হয় জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনবার্সন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল)। ঘটনাস্থল থেকে পথচারীরা প্রাইভেটকারটি জব্দ ও গাড়ির চালকসহ তিনজনকে আটক করে। পরে তাদের বনানী থানায় নেওয়া হয়। অবশ্য পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয় ওই রাতেই।

মনোরঞ্জনের ছেলে মৃত্যুঞ্জয় হাজং সমকালকে জানান, ৩ ডিসেম্বর দুপুরে পঙ্গু হাসপাতালে অস্ত্রপোচার করে তার বাবার ডান পায়ের গোড়ালির উপর থেকে কেটে ফেলা হয়। সংক্রমণের কারণে ৮ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় হাঁটুর নিচ থেকে কেটে ফেলতে হয়েছে। দ্বিতীয় দফার অস্ত্রোপচারের আগে তার বাবা হার্টঅ্যাটাক করেন। অবস্থা আরও অবনতি হয়ে পড়ে। তার ডান পায়ের অবস্থা ভালো নয়। চিকিৎসক তাদের জানিয়েছেন, উরু থেকে পা কেটে ফেলতে হতে পারে। বাম পায়ের অবস্থায় ভালো নয়। অবস্থা অবনতি হওয়ায় পঙ্গু হাসপাতাল থেকে স্থানান্তর করে গত সোমবার রোগীকে শাহবাগে বারডেম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার থেকে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে বারডেম হাসপাতালে মৃত্যুঞ্জয়ের সঙ্গে কথা হচ্ছিল তখনও তার কণ্ঠে আক্ষেপ ও হতাশা। তিনি বলেন, একটি ঘটনা ঘটেছে। এর জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে কেন মামলা নিতে এতো গড়িমসি। তিনি জানান, তার বাবা পায়ের যন্ত্রণায় কান্নাকাটি করছেন। অসহায়বোধ করছেন।

এদিকে ঘটনার পর মামলা না নেওয়ায় হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ (এইচআরএফবি) তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।